আগে শুধু শীতে ফাটলেও এখন বছরজুড়েই ফাটে ঠোঁট। এ অংশে তেল গ্রন্থি না থাকায় এটা শুষ্কও দেখায় বেশি। ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় কোমল। ঠোঁটের চামড়া ওঠা, শুষ্ক হয়ে যাওয়া—এসব এখন প্রতিদিনের কাহিনি। তবে ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হওয়া শুরু হলেই সমস্যা। এ ধরনের পরিস্থিতির আগাম সমাধান হচ্ছে, এখন থেকেই ঠোঁটের যত্ন নেওয়া শুরু করা। সামনের কয়েকটি মাস তাহলে শুষ্ক, রুক্ষ ঠোঁটের কবলে পড়তে হবে না।
ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে এ সময়ে পানি খাওয়া হয় কম। এটিই প্রথম সমস্যা। তাই পানি খাওয়া অব্যাহত রাখতে হবে। ভেতর থেকে পানিশূন্যতা না হলে শরীরের ওপরও এর ছাপ পড়বে না।
পরের যে ভুলটি করি, সেটা হলো, ঠোঁট শুকিয়ে গেলেই জিব দিয়ে ভিজিয়ে নিই। থুতুতে একধরনের অ্যাসিডজাতীয় উপকরণ থাকে, যাতে ঠোঁটের রং বদলে যায়। পাশাপাশি এটি ঠোঁটকে আরও বেশি শুষ্ক করে ফেলে। শিশুরা এটি বেশি করে, এটা না করার জন্য বোঝাতে হবে। জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, ঠোঁটে সব সময় লিপবাম বা লিপজেল লাগিয়ে রাখা। লিপবামের মধ্যে আর্দ্রতা বেশি থাকতে হবে। বাজারের অনেক লিপবাম থেকে সেটাই বেছে নিন, যেটায় কোনো সুগন্ধি নেই। সুগন্ধি না থাকা মানে–রাসায়নিক পদার্থ যোগ করা নেই। অর্গানিক অনেক লিপবাম এখন পাওয়া যাচ্ছে, তেমন কিছু কেনার পরামর্শ দিলেন রূপবিশেষজ্ঞরা।
লিপস্টিক লাগানোর আগেও লিপবাম ব্যবহার করতে হবে। আর্দ্রতা আছে, এমন লিপস্টিক এই আবহাওয়ার জন্য মানানসই। তবে যাঁরা এ ধরনের লিপস্টিক পছন্দ করেন না, তাঁরা লিপস্টিক লাগানোর আগে অবশ্যই লিপবাম বা লিপজেল লাগিয়ে নেবেন। সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ)–সমৃদ্ধ লিপবামও সহায়তা করবে অনেকখানি।
মানুষ ভাবে ঠোঁট ফাটা বড় কোনো বিষয় না। এ কারণে এর বাড়তি যত্নও নেয় কম। বয়স হয়ে গেলে ঠোঁটের চারপাশ অনেক সময় কুঁচকে যায়। অনেকটা সময় ধরে লিপবাম বা জেল ব্যবহার না করার বদভ্যাসে এ ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। রাতে ঘুমানোর আগেও ঠোঁটে পুরু করে লিপবাম লাগিয়ে নিন। এতে করে যাঁদের মুখ খুলে ঘুমানোর অভ্যাস, লালা গড়িয়ে পড়লেও তাদের সমস্যা নেই। মুখ দিয়ে নিশ্বাস নেওয়া, বের হওয়ার সময়ও কিন্তু ঠোঁট শুকিয়ে যায়। ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণে অ্যালার্জির অ্যাটাকও হতে পারে।
চাইলে ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করেও লিপবাম তৈরি করা যায়। পদ্ধতি জানালেন আয়ুর্বেদ রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা—
১ টেবিল চামচ করে বিটরুটের রস আর পেট্রোলিয়াম জেলি নিয়ে মেশান। ফ্রিজে জমিয়ে এরপর ব্যবহার করুন। বিটরুটের লাল রং প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁট রাঙাবে। এতে থাকা মিনারেলস ঠোঁট ফাটা কমাবে।
লেবুর রস আর চিনি মিশিয়ে স্ক্রাবার বানিয়ে নিন। হালকা ঘষলেই মরা চামড়া উঠে যাবে।
গ্লিসারিন আধা চা-চামচ, গোলাপের পাপড়ির রস ১ চা-চামচ, পেট্রোলিয়াম জেলি ১ চা-চামচ মিলিয়ে নিতে পারেন। একটি স্টিলের বাটিতে তিনটি মিশ্রণ একসঙ্গে মিহি করে মেলান। এরপর সেটি গরম পানির মধ্যে রাখুন। ধীর ধীরে নাড়ুন। এবার কাচের কৌটায় সংগ্রহ করুন। ঠোঁটের জন্য সিরাম তৈরি। এক মাস পর্যন্ত সংগ্রহ করা যাবে।
© Rajbari News Portal | Website Design & Developed by Glossy IT