শিশুর বিকাশের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো হাঁটতে শেখা। সাধারণত এক বছরের মধ্যেই বেশির ভাগ শিশু হাঁটতে শিখে যায়। হাঁটতে শেখার শুরুর দিকে দেখা যায়, অনেক শিশু পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়ায় এবং সেভাবেই হাঁটতে চেষ্টা করে। পায়ের গোড়ালি অথবা অন্য অংশের ওপর ভর না দিয়ে আঙুলের ওপর দাঁড়ানো এবং হাঁটার অভ্যাসকে বলে ‘টো ওয়াকিং’।
সাধারণত দুই বছরের মধ্যে শিশু যখন পুরোদমে দৌড়ানো শিখে যায়, তখন টো ওয়াকিংয়ের অভ্যাস চলে যায়। টো ওয়াকিং একটা বয়সে স্বাভাবিক হলেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকতে পারে এর পেছনে—
তবে ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে টো ওয়াকিংয়ের কারণ জানা যায় না।
যে বাচ্চাদের টো ওয়াকিংয়ের অভ্যাস থাকে, হাঁটার সময় বারবার তারা পড়ে যেতে পারে, পড়ে গিয়ে মাথাসহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে ভারসাম্য রাখা ব্যাহত হয়, খেলাধুলা বা অন্যান্য কাজে অংশগ্রহণ করতে, জুতা পরতে অসুবিধা হয়।
শিশুর হাঁটায় টো ওয়াকিংয়ের মতো সমস্যা চোখে পড়লে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শুরুতে পায়ের হালকা কিছু ব্যায়াম করানো হয়, তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বোটক্স ইনজেকশন, বিশেষ জুতা পরানো, পায়ে প্লাস্টার করে রাখা কিংবা সার্জারিও লাগতে পারে।
শিশুর বয়স দুই বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও যদি সম্পূর্ণ পায়ের ওপর ভর দিয়ে না হেঁটে টো ওয়াকিং করে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া বাচ্চা যদি স্বাভাবিকভাবে হাঁটা শেখার পর আবার নতুন করে টো ওয়াকিং করা শুরু করে অথবা শিশুর বিকাশের অন্য ধাপগুলো যদি স্বাভাবিক না থাকে, সে ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। টো ওয়াকিং খুব বেশি দিন চলতে থাকলে বাচ্চার কাফ মাসল ও অ্যাকিলিস টেন্ডন বেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে। এ কারণে শিশু আর কখনোই পায়ের পাতা মেঝেতে ফেলে হাঁটা না–ও শিখতে পারে। অর্থোপেডিক সার্জন, ফিজিক্যাল মেডিসিন অথবা শিশু নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
ডা. ফারাহ দোলা, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
© Rajbari News Portal | Website Design & Developed by Glossy IT