ক মাস আগেও একরাশ আনন্দ নিয়ে অনাগত সন্তানের মুখ দেখার দিন গুনছিলেন গাজার বাসিন্দা জুমানা ইমাদ আর তাঁর স্বামী। দিন ঘনিয়ে আসায় নতুন শিশুটি যেকোনো সময় পৃথিবীতে আসতে যাচ্ছে জেনে গুছিয়ে রেখেছিলেন হাসপাতালে যাওয়ার ব্যাগও। তাঁদের চার বছর বয়সী মেয়ে তুলিনেরও ছোট বোনকে দেখার জন্য তর সইছিল না। কিন্তু ৭ অক্টোবর এই পরিবারের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
ইসরায়েলি জনপদে হামাসের রক্তক্ষয়ী হামলার জবাবে গাজায় নজিরবিহীন মাত্রায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা উপত্যকাজুড়ে চলতে থাকে ধ্বংসলীলা, যা এখনো চলমান। এরই মধ্যে প্রসববেদনা ওঠে জুমানার। বিবিসির সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।
লাগাতার গোলাবর্ষণের মধ্যেই আমার প্রসববেদনা ওঠে।
ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জুমানা ইসরায়েলি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী হামলা শুরুর দুই দিন পর উত্তর গাজার বাড়ি ছেড়ে উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের দিকে রওনা হন। ভীতসন্ত্রস্ত ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জুমানা তাঁর মেয়েকে নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সঙ্গে শুধু মেয়ের জন্য একটি বড় কাপড়, এক বাক্স দুধ ও ছোট একটি ব্যাগ নিয়েছিলেন তিনি।
ভয়েস মেসেজে বিবিসিকে জুমানা বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব কঠিন ছিল। আমরা বাসায় রাতে ঘুমাতে পারছিলাম না। সেখানে এত বোমাবর্ষণ হচ্ছিল যে আমাদের অন্য জায়গায় যেতে হয়। আমার মতো অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মাঝে মাঝে বাইরে হাঁটতে যাওয়া উচিত। কিন্তু যুদ্ধের কারণে আমরা খাবার কিনতে পর্যন্ত বাইরে যেতে পারছিলাম না।
বারবার বিদ্যুবিভ্রাট, ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ও পানিসংকট জুমানার জন্য পরিস্থিতিকে করে তোলে আরো দুর্বিষহ। ১৩ অক্টোবর গাজার আল-ওয়াদা হাসপাতালে তালিয়াকে জন্ম দেন জুমানা।
সূত্র : বিবিসি
© Rajbari News Portal | Website Design & Developed by Glossy IT