
প্রযুক্তির যুগে সুখকর জীবনের কিছুটা দায়ভার প্রযুক্তির ওপর পড়ে। এক দল মনোবিজ্ঞানীর গবেষণায় বলা হয়েছে, একের পর এক ইমেইল নোটিফিকেশন জীবনে স্ট্রেস আনতে অন্যতম বিষাক্ত উৎস হয়ে কাজ করে। টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে বিস্তারিত।
লন্ডনভিত্তিক ফিউচার ওয়ার্ক সেন্টারের এ গবেষণায় বলা হয়, প্রযুক্তিপ্রেমীদের স্মার্টফোন বা স্মার্ট রিস্ট ব্যান্ডের ক্রমাগত ইমেইল আসতে থাকে। এগুলো পেশাগত বা ব্যক্তিগত হতে পারে। তবে এসব লাগাতার ইমেইল প্রাপকের মনে সব সময় কাজে ব্যস্ত থাকার অনুভূতি দেয়। ফলে এক ধরনের স্ট্রেস ভর করে মনে। আসলে অফিসে কাজের সময় ইমেইল লেন-দেনের কারণে এমন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।
আবার মেইল অ্যাপে না থাকার পরও পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ইমেইল আর মেসেজ দেখার অর্থ দাঁড়ায়, তারা কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আছেন। তাই ঘরে-বাইরে স্মার্টফোনের মেইল অ্যাপ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষকদের দল জানান, ইমেইল মানুষের জীবনে দুই পাশে ধারালো তলোয়ারের মতো হয়ে গেছে। যোগাযোগ করতে সুবিধা করছে। আবার একই সঙ্গে স্ট্রেস আনছে।
প্রধান গবেষক ড. রিচার্ড ম্যাককিনন জানান, মেইল অ্যাপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে চলবে না। ইমেইল খুলে জরুরি মেসেজটি দেখে আবারো তা বেশ কিছু সময়ের জন্যে বন্ধ করে দিলে উপকার মিলবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২ হাজার মানুষের ওপর গবেষণা পরিচালিত হয়। তাদের দিনের স্ট্রেসের অন্যতম কারণ হয়ে ধরা দিয়েছে দুটি বিষয়। এক, সারাদিন ইমেইলের অ্যাপটি খুলে রাখা। দুই, প্রতিদিন সকাল ও রাতে ইমেইল চেক করা। আর এর সঙ্গে বিশেষ করে 'পুশ নোটিফিকেশন' বড় ধরনের প্রভাবক হয়ে কাজ করে। ইমেইল আসলেই এটি ফিচার অটোমেটিক আপডেট হয় এবং ইমেইল দেখতে ব্যবহারকারীর ওপর চাপ প্রয়োগ করে।
ইমেইলের কারণে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম স্ট্রেসের মধ্যে দিন কাটায়। নটিংহামে ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল সোসাইটিস ডিভিশন অব অকুপেশনাল-এর বার্ষিক সভায় এ গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেছে। যাদের ওপর গবেষণা পরিচালিত হয়েছে তাদের ৩০ শতাংশ প্রতিদিন ৫০টিরও বেশি ইমেইল পান। এদের ৬৫ শতাংশের বেশি পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ইমেইল দেখেন।
তাই ইমেইলের কারণে স্ট্রেসে আক্রান্ত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা। এর জন্যে অ্যাপটি সব সময়ের জন্যে চালু না রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০১৪ সালে গোটা বিশ্বে ১৯৬.৩ বিলিয়ন ইমেইল পাঠানো হয়েছে।