প্রতিরক্ষা নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ধারাবাহিকতায় এখন থেকে সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধে অর্থ ব্যয় না করে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির দিকে যুক্তরাষ্ট্র মনোযোগ দেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। আর বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি রাশিয়া এবং চীন হবে টার্গেট। তাই ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেনের পর থেকে সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধের নামে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত্মে পরিচালিত মার্কিন অভিযানকে আর মূল বিষয় হিসেবে দেখতে চায় না ট্রাম্প প্রশাসন। আগামী দিনগুলোতে পেন্টাগনের দৃষ্টিভঙ্গী কী হবে, সেই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলপত্র প্রকাশকালে শুক্রবার এই মূল্যায়ন তুলে ধরেন ম্যাটিস। তিনি বলেন, 'চীন ও রাশিয়ার মতো সংশোধনবাদী শক্তিগুলো থেকে আমরা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি। এসব দেশ তাদের কর্তৃত্ববাদী ছাঁচের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ একটি বিশ্ব গড়ার চেষ্টা করছে। আমাদের সামরিক বাহিনী এখনো শক্তিশালী। কিন্তু আকাশ, স্থল, সাগর, মহাশূন্য ও সাইবারস্পেস- যুদ্ধের প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাদের সুবিধাজনক অবস্থান হ্রাস পেয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। তাই তাদের সঙ্গে পালস্না দিতে সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধে অর্থ ব্যয় না করে আমাদের সামরিক শক্তি বাড়ানো উচিত। এই কৌশলের মূল লক্ষ্য হবে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তুত করা।' নতুন প্রস্ত্মাবিত প্রতিরক্ষা নীতি ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস ম্যাটিস রাশিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'তোমরা যদি আমাদের চ্যালেঞ্জ করো, তাহলে তা হবে তোমাদের দীর্ঘতম খারাপ দিন।' আর মার্কিন সামরিক বাহিনীকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করে ম্যাটিস বলেন, উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের পারমাণবিক হামলার ভয়াবহ জবাব দেয়া হবে। রাজধানী ওয়াশিংটনে এসব কথা বলার সময় ম্যাটিস সামরিক বাহিনীকে পর্যাপ্ত তহবিল দেয়ার জন্য কংগ্রেসের প্রতি আবেদন জানান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের বাজেট পরিকল্পনায় প্রতিরক্ষা ব্যয় ১০ শতাংশ বা ৫৪ বিলিয়ন ডলার বাড়াতে চাইছেন, এর জন্য বৈদেশিক সহায়তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যয় বরাদ্দ হ্রাস করার প্রস্ত্মাব করেছেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলপত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের গুরম্নত্বপূর্ণ অবস্থান বদলের ইঙ্গিত আছে বলে মনে ধারণা করা হচ্ছে। নাইন-ইলেভেন হামলার পর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক লক্ষ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরম্নদ্ধে লড়াই। যেমন আফগানিস্ত্মানে বিদ্রোহ দমন অভিযান এবং ইরাক ও সিরিয়া। কিন্তু এখন জোরালোভাবে তা আবার আন্ত্মঃরাষ্ট্রীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে মোড় ফেরাচ্ছে দেশটি। বিশেষ করে কথিত সমকক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া ও চীনের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সুবিধাজনক অবস্থান দ্রম্নত হ্রাস পাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ লড়াইয়ের ময়দানে সুবিধাজনক অবস্থানের জন্য নতুন প্রযুক্তির জন্য বিনিয়োগ দরকার বলে জানিয়েছেন জেমস ম্যাটিস। কিন্তু এটি শুধু অর্থ ব্যয়ের বিষয় নয়। গত কয়েক বছরে মার্কিন কংগ্রেসে সামরিক বাজেট পাসের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের বাধা পেরম্নতে হয়েছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রস্তুত অবস্থার ক্ষেত্রে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রম্নপক্ষের চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে বলে দাবি করেছেন ম্যাটিস।যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আলি রিয়াজ বলেন, 'তাদের এই নীতি স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালের মতো। এর ফলে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে হয়তো, কিন্তু টানাপড়েন শুরম্ন হবে। ফলে এক ধরনের 'প্রক্সি ওয়ার' শুরম্ন হবে। আবার যেসব দেশ সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রয়েছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে, সেটাও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।' তবে ওয়াশিংটনের এমন নীতির তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার পরিবর্তে সংঘর্ষের মাধ্যমে বিশ্বে তাদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আর চীন একে স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা বলে উলেস্নখ করেছে।
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Sunday, January 21, 2018
সন্ত্রাস নয়, হুমকি এখন রাশিয়া ও চীন
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.