মানবদেহে কাঠামোর একটি বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে মেরুদ-। মেরুদ- ৩৩টি ছোট ছোট হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত। মাথার খুলির নিচ থেকে প্রথম ৭টি কশেরুকা নিয়ে মানুষের ঘাড় গঠিত। মরেুদ-ের ঘাড়ের হাড়গুলো সারভাইকেল ভার্টিবা নামে অধিক পরিচিত। এই ছোট হাড়গুলোর প্রত্যেকটি কশেরুকা (ভার্টিবা) বলে। প্রতি দুইটি কশেরুকার মাঝে চাপ শোষণকারী ডিস্ক থাকে যেটি মেরুদ-ের এক হাড়কে অন্য হাড় থেকে আলাদা রাখে এবং নড়া-চড়া করতে সাহায্য করে। প্রত্যেকটি ডিস্কের ভেতরের অংশ জেলির মতো নরম এবং বাইরের অংশ শক্ত তন্তু দ্বারা গঠিত। ভেতরের অংশকে নিউক্লিওলাস পালপোসাস এবং বাইরেরর অংশকে অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস বলে। ডিস্ক, মরেুদ-ের বিভিন্ন ধরনের নাড়া-চাড়া ও ভার বহনজনিত চাপকে প্রশমিত করে। সারভাইকেল ভার্টিবা ও ডিস্কগুলো সাধারণত আকারে শরীরের অন্যান্য ডিস্কের তুলনায় অনেক ছোট হয়। তাই ঘাড়ের ডিস্কের অল্প স্থানচ্যুতির ফলে ঘাড়সহ হাতের বিভিন্ন অংশে অনেক ব্যথা হয়। ঘাড়ের ডিস্ক প্রোল্যাপ্সের কারণ ও লক্ষণ : বাহ্যিক আঘাত, হাড়ের ক্ষয় ও অতিরিক্ত ভাড় বহন কশেরুকার মধ্যবর্তী অংশ ফাক হয়ে গেলে ডিস্কের মধ্যবর্তী অংশ যখন বাইরে বের হয়ে গিয়ে স্নায়ুমূলে (নার্ভরুট) চাপ সৃষ্টি করে ডিস্ক প্রোলাপ্সজনিত ব্যথার সৃষ্টি করে। ডিস্কের অবস্থানের ও প্রোল্যাপ্সের মাত্রার উপর নির্ভর করে ডিস্ক প্রোলাপ্সের জটিলতা। প্রাথমিক অবস্থায় রোগী মেরুদ-ের ব্যথা অনুভব করে। পরবর্তীতে জটিলতা বাড়তে থাকলে রোগী হাত বা পায়ে ঝিনঝিন শিনশিন বা অবশ হওয়া অনুভব করেন। ঘাড় ব্যথার লক্ষণ : ঘাড়ে উৎপন্ন ব্যথা ঘাড় নড়াচড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। ঘাড় থেকে ব্যথা মাথার দিকে বা শিরদাড়া বেয়ে হাতের দিকে যেতে পারে। ব্যথার সঙ্গে ঘাড়ে বা হাতে জ্বালা-পোড়া, ঝিনঝিন, শিনশিন বা অবশ হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় ঘাড়ে উৎপন্ন ব্যথার ফলে রোগী হাত-পা বা আঙ্গুল অবশ হয়ে যেতে দেখা যায়। একপর্যায়ে হাত ও পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পেতে থাকে। অনেক সময় সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে চলাফেরা বা দৈনন্দিন কাজে সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা : ঘাড় ব্যথায় ক্রমাগত ব্যথানাশক খাওয়ার পরিবর্তে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রোগ নির্ণয় করতে হবে। প্রথমিকভাবে কয়েকটি ফিজিওথেরাপি দিয়েও যখন রোগী আরোগ্য লাভ না করে তখন এমআরআই পরীক্ষা করে দেখতে হবে ডিস্ক প্রোলাপ্সজনিত কোন সমস্যা আছে কি না? মেরুদ-ের ডিস্কের চাপ বেশি হলে শল্য চিকিৎসার মাধ্যমেই সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের অত্যাধুনিক লেজার সার্জারির মাধ্যমে কাটা-ছেঁড়াহীন (পিএলডিডি) চিকিৎসা বাংলাদেশে চালু আছে। এর ফলে রোগীকে দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল চিকিৎসার পরিবর্তে স্বল্পমেয়াদি ও নিরাপদ লেজার চিকিৎসায় দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হয়। তাছাড়া যেহেতু লেজার সার্জারিতে রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না তাই ডায়াবেটিস, কিডনি ও হৃদরোগে আক্রান্ত এবং বয়স্ক রোগীরাও এখন ঝুঁকিহীনভাবে পিএলডিডি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। খরচ : অত্যাধুনিক লেজার সার্জারির পিএলডিডি অপারেশনটি আমরেকিার ফডোরলে ড্রাগ আডমনিস্ট্রিশেন কর্তৃক স্বীকৃত হওয়ায় উন্নত বিশ্বে ব্যাপক পরিচিত। ইউরোপ ও আমেরিকায় এই চিকিৎসার খরচ যদিও অত্যন্ত ব্যয়বহুল তথাপি বাংলাদেশে অত্যন্ত সুলভমূল্যে একমাত্র লেজার সার্জারি এ্যান্ড হাসপাতালে এই চিকিৎসাটি চালু আছে। রোগীদের সন্তুষ্টি ও দ্রুত আরোগ্যের কারণে পিএলডিডি চিকিৎসাটি বাংলাদেশে ক্রমইে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই ঘাড় ব্যথায় অবহেলা না করে নিরাপদ চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন।
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Thursday, January 25, 2018
ঘাড় ব্যথায় লেজার চিকিৎসা
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.